ঈশ্বরদীতে ৩০টি পূজা মন্ডপে হবে শারদীয় দুর্গা পুজা, চলছে শেষ মুহুর্তের প্রস্তুতি।

- আপডেট সময় : ০৯:৪৪:২৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ২০৮ বার পড়া হয়েছে
ঈশ্বরদীতে ৩০টি পূজা মন্ডপে হবে শারদীয় দুর্গা পুজা, চলছে শেষ মুহুর্তের প্রস্তুতি।
নিজস্ব প্রতিবেদক:
এগিয়ে আসছে শারদীয় দুর্গাপূজা। উৎসবের আমেজে ভরে উঠেছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের প্রতিটি উঠোন। পূজা মন্ডপগুলোতে প্রতিমা তৈরির কাজ চলছে পুরোদমে। এ বছর ঈশ্বরদীতে ৩০টি মন্ডপে দুর্গাপূজা উদযাপিত হবে। যা গত বছরের তুলনায় বেশি। পূজা উদযাপনকে নির্বিঘ করতে তৎপর রয়েছে জেলা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সব কয়টি ইউনিট।

ঈশ্বরদীতে ৩০টি পূজা মন্ডপে হবে শারদীয় দুর্গা পুজা, চলছে শেষ মুহুর্তের প্রস্তুতি।
ঈশ্বরদী উপজেলার নির্বাহী অফিসার মনিরুজ্জামান বলেন এ বছর ঈশ্বরদীর বিভিন্ন এলাকায় মোট ৩০টি মন্ডপে শারদীয় দুর্গাপূজা উদ্যাপিত হবে। ঈশ্বরদের শহরে ৯টি, মুলাডুলিতে ৬টি, এবং বিভিন্ন ইউনিয়নে ১৫টি।
আসন্ন দুর্গাপূজা উপলক্ষে সার্বিক প্রস্তুতি ও পরিকল্পনা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে তৎপরতা শুরু করেছি আমরা। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সঙ্গে মতবিনিময়, পূজা উদ্যাপন কমিটির নেতৃবৃন্দের সঙ্গে একের পর এক সভা করছেন জেলা ও উপজেলা প্রশাসন।
র্যাব পুলিশ আন্সার সম্বনয়ে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি, আমরা সিসি ক্যামেরায় মনিটরিং, মিডিয়া সেল মনিটরিং, স্বেচ্ছা সেবক থেকে শুরু করে সব ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। গুজব প্রতিরোধে ব্যবস্থা গ্রহণ থেকে শুরু করে আমরা যা যা করার দরকার তাই করেছে এবারে পূজা মন্ডপে গুলোতে।
পূজা উদযাপন কমিটির নেতারা বলেন পাশাপাশি বিএনপি, জামায়াতসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও তাদের প্রতিনিধিরা মন্ডপে মন্ডপে গিয়ে খোঁজ খবর নিচ্ছেন। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগ রেখে চলেছেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা। শারদীয় দুর্গাপূজা শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করার লক্ষে গ্রামে গ্রামে দলীয় কর্মীদের সমন্বয়ে কমিটি গঠনের উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)।
সরেজমিনে দেখা যায়, মৌবাড়ি বাজার সার্বজজনীন দুর্গা মন্দির, ঠাকুরবাড়ি
দুর্গা মন্দির, পৌর মার্কেট,মেথড়পাড়া স্কুলপাড়া, রেনেসাঁ ক্লাব,রেলগেট পূজা মন্দিরে প্রতিমা তৈরির কাজ শেষ হয়েছে। এখন চলছে প্রতিমার সাজসজ্জার কাজ। প্রতিমা তৈরি ও সাজসজ্জার কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন কারিগররা। কারিগরদের সাথে কথা বলে জানা যায়, যথাসময়ে প্রতিমা তৈরির কাজ শেষ হবে। নির্ধারিত সময়ের আগেই দুর্গা দেবীর আরাধনার জন্য মন্ডপগুলো প্রস্তুত করা হবে।
বারোবারি ঠাকুর বাড়ি,মৌবাড়ি দূর্গা মন্দির কমিটির সভাপতি শ্রী স্বপন কুমার কুন্ডু বলেন বিগত বছরগুলোর মতো এবারও আনন্দঘন ও উৎসবমুখর পরিবেশে দুর্গাপূজা উদযাপিত হবে। উপজেলা প্রশাসন ও জেলা প্রশাসন থেকে আমাদের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। পূজা উপলক্ষে দারুণ উৎসবমুখর পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে।
পৌর মার্কেট মন্দির কমিটির সভাপতি বলেন, সুনীল চক্রবর্তী বলেন, আমরা ঈশ্বরদী উপজেলা প্রশাসন এবং ঈশ্বরদী প্রশাসনের সার্বিক সহযোগিতা পেয়েছি আমরা নিবিঙ্গে এবং সুন্দর পরিবেশে পূজা উদযাপন করতে পারব। এবারও প্রস্তুতি শেষের দিকে। এখন সবাই মিলেমিশে আনন্দের সঙ্গে প্রতিমা তৈরি ও মন্ডপের সাজসজ্জার কাজ করছে।
যে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি বড় রাজনৈতিক দলগুলো আমাদের সঙ্গে নিবিড়ভাবে কাজ করছে। বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এক উজ্জ্বল উদাহরণ। প্রতি বছরের মতো এবারও আমরা শান্তিপূর্ণভাবে পূজা উদযাপন করতে পারবো বলে আশা করছি। তারা আরও বলেন, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, র্যাব, বিজিবি, পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যসহ রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা পূজার আয়োজনে সবধরণের সহযোগিতা করছেন। বিশেষ করে গণমাধ্যম কর্মীরা মন্ডপে মন্ডপে ঘুরছেন। আমাদের সঙ্গে তারাও এই পূজা নির্বিঘ্ন করতে কাজ করে যাচ্ছেন।
এদিকে পূজা উদযাপন কমিটির আরেক নেতা তাপস বলেন, আমরা এলাকার সকল মানুষ মিলে একত্রিত হয়ে উৎসব পালন করবো। এখানে কে হিন্দু, কে মুসলিম কোন ভেদাভেদ নেই। আমরা একে অপরের পরিপুরক। তবে আমরা আশা করছি এবারের পুজা সুন্দর সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে পারবো।
শ্রী শ্রী হরে কৃষ্ণ সংঘ মন্দির কাচারী পাড়া রেনেসাঁ ক্লাব মন্দিরের সাধারণ সম্পাদক শ্রী দিপুরায় বলেন
জেলা প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসন, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, র্যাব, বিজিবি, পুলিশ, আনসার ভিডিপিসহ সকল আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্যদের সাথে স্বেচ্ছাসেবী কমিটি নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করবে। সেই সাথে সব কয়টি বড় রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীগণ আমাদের সাথে থাকবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন।
ঈশ্বরদী সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার প্রণব কুমার বলেন, জেলা পুলিশের গোয়েন্দা সংস্থা ও সাইবার টিমসহ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সকল ইউনিট ঈশ্বরদী ব্যাপি কঠোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কাজ করে যাচ্ছে। এ বছর শারদীয় দুর্গাপূজা নির্বিঘ্ন করতে সার্বিক প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। এখন মন্ডপগুলোতে প্রতিমা তৈরির কাজ চলমান। পূজা চলাকালীন সকল মন্ডপে পুলিশের কঠোর নজরদারি রাখা হবে। সিসি ক্যামেরা স্থাপন থেকে শুরু করে মিডিয়া সেল মনিটরিং ব্যবস্থা গ্রহণ এবং গুজবে কান না দেয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
ঈশ্বরদী পৌর বিএনপির সাবেক সফল সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া পিন্টু ও ঈশ্বরদী আটঘরিয়া ধানের শীষের মনোনয়ন প্রত্যাশী তিনি বলেন সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করার ষড়যন্ত্র এ দেশে আর সফল হবে না। সনাতনী ভাইবোনেরা যেন নির্বিঘ্নে শারদীয় দুর্গাপূজা উদযাপন করতে পারেন, সে লক্ষে বিএনপি ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করবে। আমরা সকল ধর্ম ও বর্ণের মানুষ মিলে নতুন বাংলাদেশ গড়ে তুলবো।তিনি আরো বলেন আমি নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছি ঈশ্বরের শহরে নয়টি এবং ইউনিয়নের সব মন্দিরে যোগাযোগ রাখার জন্য এবং যেকোনো সমস্যায় নিরাসনে পৌর বিএনপি, ছাত্র দল, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক, অঙ্গ সহযোগী সংগঠন তাদের পাশে থাকবে।