ঢাকা ০৮:১০ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৫, ২৮ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
ঘোষনা:
স্পর্শ নিউজে আপনাকে স্বাগতম। বিশ্বব্যাপি বিজ্ঞাপন প্রচারের জন্য এবং নিউজ সংক্রান্ত যে কোন বিষয়ে আপনি আমাদের সাথে যোগাযোগ করবেন whatsapp নাম্বারে০১৭১৬-৭২৯৫৭৪ অথবা ইমেইল নাম্বারে refazbiswas@gmail.com স্পর্শ নিউজ এর পক্ষ থেকে আপনাকে ধন্যবাদ।

তিস্তার পানি বিপদসীমার ওপরে, নিম্নাঞ্চল প্লাবিত

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ১২:৪১:১৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩ অগাস্ট ২০২৫ ১১ বার পড়া হয়েছে
স্পর্শ নিউজ অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

তিস্তার পানি বিপদসীমার ওপরে, নিম্নাঞ্চল প্লাবিত

মো. সাইফুল ইসলাম, নীলফামারী প্রতিনিধি।।

উজানের টানা ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলের কারণে নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তা নদীর পানি বিপদসীমার ৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এর ফলে জেলার নিম্নাঞ্চল ও চরাঞ্চলগুলোতে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।

রবিবার (৩ আগস্ট) সকাল থেকে ধাপে ধাপে তিস্তার পানি বাড়তে শুরু করে। সকাল ৬টায় পানি ছিল ৫২.১৩ সেন্টিমিটার, যা ৯টায় পৌঁছে যায় ৫২.১৫ সেন্টিমিটারে—এটাই বিপদসীমা। এরপর দুপুর ১২টার দিকে পানি দাঁড়ায় ৫২.২০ সেন্টিমিটার অর্থাৎ বিপদসীমার ৫ সেন্টিমিটার ওপরে।

ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) গেজ রিডার নুরুল ইসলাম জানান, “উজানে পানির প্রবাহ বাড়ায় দ্রুতই তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে পানি বেড়েছে।” পানি নিয়ন্ত্রণে ব্যারাজের ৪৪টি স্লুইসগেট খুলে দেওয়া হয়েছে এবং সংশ্লিষ্ট বিভাগ রয়েছে সতর্কাবস্থায়।

তিস্তার পানি বৃদ্ধির ফলে ডিমলা উপজেলার পূর্ব ছাতনাই, খগাখড়িবাড়ী, টেপাখড়িবাড়ী, খালিশা চাপানী, ঝুনাগাছ চাঁপানী, গয়াবাড়ী এবং জলঢাকা উপজেলার গোলমুন্ডা, ডাউয়াবাড়ী, শৌলমারী ও কৈমারী ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ নিম্নাঞ্চল ও চরগ্রামগুলো প্লাবিত হয়েছে।

স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের ভাষ্যমতে, ৮ থেকে ১০ হাজার পরিবারের বাড়িঘরে পানি ঢোকার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।

ডিমলার টেপাখড়িবাড়ী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম শাহিন জানান, “অন্তত ১০টি চরগ্রামের মানুষ বন্যা আতঙ্কে রয়েছেন। খগাখাড়িবাড়ির বাইশপুকুর গ্রাম ইতোমধ্যেই প্লাবিত হয়েছে।”

পূর্ব ছাতনাই ইউনিয়নের (ভারপ্রাপ্ত) চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান বলেন, “সবচেয়ে বড় চরগ্রাম ঝাড়সিংশ্বরসহ বেশ কয়েকটি গ্রামে পানি ঢুকে পড়েছে। ফসলের জমি, ধানের বীজতলা ডুবে গেছে। বন্যা পরিস্থিতি দ্রুতই ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে।”

অপরদিকে, ব্যারাজের ভাটি অঞ্চলে লালমনিরহাট জেলার হাতিবান্ধা ও কালিগঞ্জ উপজেলার নদীবেষ্টিত চর ও নিম্নাঞ্চলও প্লাবিত হয়েছে। হাঁটুসমান পানি প্রবেশ করেছে বাড়িঘরে। অনেকে পরিবার-পরিজন নিয়ে উঁচু স্থানে আশ্রয় নিতে বাধ্য হচ্ছেন।

ডালিয়া ডিভিশনের উপসহকারী প্রকৌশলী তহিদুল ইসলাম বলেন, “উজানের ভারী বর্ষণ ও বৃষ্টির কারণে পানি বেড়েছে। সন্ধ্যার মধ্যে আরও পানি বৃদ্ধির আশঙ্কা রয়েছে।”

ডিভিশনের নির্বাহী প্রকৌশলী অমিতাভ চৌধুরী জানান, “আমরা সার্বক্ষণিক নজরদারিতে আছি এবং বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি রয়েছে।”

নীলফামারী জেলা প্রশাসন নদীতীরবর্তী ও চরাঞ্চলের বাসিন্দাদের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন, তারা যেন নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যান এবং স্থানীয় প্রশাসনের দিক নির্দেশনাগুলি অনুসরণ করেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য
ট্যাগস :

তিস্তার পানি বিপদসীমার ওপরে, নিম্নাঞ্চল প্লাবিত

আপডেট সময় : ১২:৪১:১৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩ অগাস্ট ২০২৫

তিস্তার পানি বিপদসীমার ওপরে, নিম্নাঞ্চল প্লাবিত

মো. সাইফুল ইসলাম, নীলফামারী প্রতিনিধি।।

উজানের টানা ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলের কারণে নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তা নদীর পানি বিপদসীমার ৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এর ফলে জেলার নিম্নাঞ্চল ও চরাঞ্চলগুলোতে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।

রবিবার (৩ আগস্ট) সকাল থেকে ধাপে ধাপে তিস্তার পানি বাড়তে শুরু করে। সকাল ৬টায় পানি ছিল ৫২.১৩ সেন্টিমিটার, যা ৯টায় পৌঁছে যায় ৫২.১৫ সেন্টিমিটারে—এটাই বিপদসীমা। এরপর দুপুর ১২টার দিকে পানি দাঁড়ায় ৫২.২০ সেন্টিমিটার অর্থাৎ বিপদসীমার ৫ সেন্টিমিটার ওপরে।

ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) গেজ রিডার নুরুল ইসলাম জানান, “উজানে পানির প্রবাহ বাড়ায় দ্রুতই তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে পানি বেড়েছে।” পানি নিয়ন্ত্রণে ব্যারাজের ৪৪টি স্লুইসগেট খুলে দেওয়া হয়েছে এবং সংশ্লিষ্ট বিভাগ রয়েছে সতর্কাবস্থায়।

তিস্তার পানি বৃদ্ধির ফলে ডিমলা উপজেলার পূর্ব ছাতনাই, খগাখড়িবাড়ী, টেপাখড়িবাড়ী, খালিশা চাপানী, ঝুনাগাছ চাঁপানী, গয়াবাড়ী এবং জলঢাকা উপজেলার গোলমুন্ডা, ডাউয়াবাড়ী, শৌলমারী ও কৈমারী ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ নিম্নাঞ্চল ও চরগ্রামগুলো প্লাবিত হয়েছে।

স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের ভাষ্যমতে, ৮ থেকে ১০ হাজার পরিবারের বাড়িঘরে পানি ঢোকার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।

ডিমলার টেপাখড়িবাড়ী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম শাহিন জানান, “অন্তত ১০টি চরগ্রামের মানুষ বন্যা আতঙ্কে রয়েছেন। খগাখাড়িবাড়ির বাইশপুকুর গ্রাম ইতোমধ্যেই প্লাবিত হয়েছে।”

পূর্ব ছাতনাই ইউনিয়নের (ভারপ্রাপ্ত) চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান বলেন, “সবচেয়ে বড় চরগ্রাম ঝাড়সিংশ্বরসহ বেশ কয়েকটি গ্রামে পানি ঢুকে পড়েছে। ফসলের জমি, ধানের বীজতলা ডুবে গেছে। বন্যা পরিস্থিতি দ্রুতই ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে।”

অপরদিকে, ব্যারাজের ভাটি অঞ্চলে লালমনিরহাট জেলার হাতিবান্ধা ও কালিগঞ্জ উপজেলার নদীবেষ্টিত চর ও নিম্নাঞ্চলও প্লাবিত হয়েছে। হাঁটুসমান পানি প্রবেশ করেছে বাড়িঘরে। অনেকে পরিবার-পরিজন নিয়ে উঁচু স্থানে আশ্রয় নিতে বাধ্য হচ্ছেন।

ডালিয়া ডিভিশনের উপসহকারী প্রকৌশলী তহিদুল ইসলাম বলেন, “উজানের ভারী বর্ষণ ও বৃষ্টির কারণে পানি বেড়েছে। সন্ধ্যার মধ্যে আরও পানি বৃদ্ধির আশঙ্কা রয়েছে।”

ডিভিশনের নির্বাহী প্রকৌশলী অমিতাভ চৌধুরী জানান, “আমরা সার্বক্ষণিক নজরদারিতে আছি এবং বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি রয়েছে।”

নীলফামারী জেলা প্রশাসন নদীতীরবর্তী ও চরাঞ্চলের বাসিন্দাদের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন, তারা যেন নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যান এবং স্থানীয় প্রশাসনের দিক নির্দেশনাগুলি অনুসরণ করেন।